বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম। চারদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পাহাড় এর সমুদ্র এবং নদী ধারা ঘেরা। চট্টগ্রাম জেলাকে প্রাচ্যের রাণী ডাকা হয়। চট্টগ্রামের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান গুলো হলো; চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের মধ্যে প্রজাপতি পার্ক, নেভাল একাডেমী,পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, ফয়স লেক, ওয়ার সিমেট্রি, ভাটিয়ারী লেক, ডিসি হিল, বাটালি হিল, বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার, জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘর এবং চট্টগ্রাম জেলার উত্তরে চন্দ্রনাথ পাহাড়, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, মহামায়া লেক, মহুরি প্রজেক্ট, খৈইয়াছরা ঝর্ণা এবং চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিনে বাঁশখালী ইকোপার্ক, বাঁশখালী চা বাগান, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, পারকি সমুদ্র সৈকত ও সন্দ্বীপ ইত্যাদি।
চট্টগ্রাম জেলার শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে বাহির হতে নেভাল একাডেমী সংলগ্ন রোডটিতে সন্ধ্যায় দর্শনার্থীরা কর্ণফুলীর নদীর মোহনা, নদীর যাতায়াতকৃত নৌ-যান এবং নদীর ওপরদিকের কাফকো এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করে এবং পতেঙ্গা নেভাল একাডেমির ১৫ নম্বর রোডে প্রায় ৬ একর জায়গা জুড়ে দেশের প্রথম প্রজাপতি পার্ক (Butterfly Park Bangladesh) অবস্থিত। এই পার্কে প্রায় ২০০ প্রজাতির এক হাজারেরও বেশি প্রজাপতি রয়েছে। এছাড়াও এখানে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রজাপতির কৃত্রিম প্রজনন করানো হয়। পার্কটি সৌন্দয্য বর্ধনে প্রবেশ পথের রাখা হয়েছে কৃত্রিম ঝর্ণা ও বাটারফ্লাই জোন। অপরূপ প্রজাপতির ছাড়াও পার্কটিতে রয়েছে বাটারফ্লাই মিউজিয়াম। পার্কটিতে বিভিন্ন ধরনের প্রজাতি বিভিন্ন দেশের প্রজাপতি দর্শনার্থীদের জন্য সাজানো হয়েছে। শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় রাইড। পার্কের ভিতরে রয়েছে সাম্পান নৌকায় ভ্রমন বিনোদনের বিশেষ সুবিধা। স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য বনভোজন আয়োজনের করার মত জায়গা রয়েছে প্রজাপতি উদ্যানে এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আছে কনফারেন্স রুম সাথে রেস্ট হাউস এবং রেস্টুরেন্ট সুবিধা।
ভ্রমনের সেরা সময়
রৌদ্রজ্বল দিনে প্রজাপতি পাখা মেলে উড়ে বেড়ায় এবং বিকাল হতেই নিজেকে আড়াল করে ঝোপে চলে যায়। তাই প্রজাপতি পার্ক বেড়ানোর উত্তম সময় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত। আর সন্ধ্যা নামার পর চলে আসবেন নেভাল রোডে। নেভাল রোডে সন্ধ্যার পর ঠান্ডা নদী কেন্দ্রিক বাতাস উপভোগ করার মত রাত ৮-৯টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করতে পারবেন।
কাছাকাছি আরও দর্শনীয় স্থান
পতেঙ্গা সি বিচ, আউটার রিং রোড, বোট ক্লাব প্রভৃতি।
ভ্রমনের খরচ
প্রজাপতি পার্কে দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য টিকেট সংগ্রহ করতে হবে, পার্কের গেইটে টিকেট পাওয়া যায়, যা নিম্নরূপঃ
বাংলাদেশীদের জন্য:
বাচ্চা প্রতি জন্য প্রবেশ টিকেট মূল্য : ৫০ টাকা
প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি জন্য প্রবেশ টিকেট মূল্য : ৫০ টাকা
বিদেশীদের জন্য:
বাচ্চা প্রতি জন্য প্রবেশ টিকেট মূল্য : ১৫০ টাকা
প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি জন্য প্রবেশ টিকেট মূল্য : ২০০ টাকা
রিসোর্ট মূল্য নিম্নরূপঃ
স্ট্যান্ডার্ড : ৫০০০ টাকা
সুপার ডিলাক্স : ৬৫০০ টাকা
স্যুইটস : ৮৫০০ টাকা
(বিঃদ্রঃ রিসোর্ট এর রুমের মূল্যের এর সাথে সার্ভিস চার্জ ১০% এবং ভ্যাট ১৫% প্রযোজ্য )
নেভাল রাস্তটিতে কোন প্রকার খরচ ছাড়াই রাস্তার ধারে রেলিং এ বসে অথবা বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে এর চেয়ারে বসে সম্পূর্ন ফ্রিতে সৌন্দয উপভোগ করতে পারবেন।
কিভাবে যাবেন
আপনি চট্টগ্রামে বাহিরে থাকলে আপনি চট্টগ্রামে আসতে হবে প্রথমে। আপনি যদি ফ্লাইট যোগে চট্টগ্রাম আসেন তাহলে আপনি শাহ আমানত এয়ারপোর্ট সংলগ্ন হেটে বা রিক্সা যোগে যেতে পারবেন। সেক্ষেতে ১৫ থেকে ২৫ টাকা ভাড়া প্রদান করতে হবে।
আপনি যদি ভিন্নভাবে চট্টগ্রাম আসেন তার প্রয়োজনীয় ভাড়ার হিসাব নিম্ন দেওয়া হলো।
কদমতলি রেল স্টেশন থেকে
সিএনজি টেক্সি : ৩০০ -৩৫০ টাকা
লোকাল বাস: কদমতলি থেকে টাইগারপাশ ৫ টাকা, টাইগার পাশ হতে সিমেন্ট ক্রসিং ২৫ টাকা, সিমেন্ট ক্রসিং হতে এয়ারপোর্ট ১০ টাকা।
পাঠাও বা অন্যান্য সার্ভিস পাবেন, এ্যাপের মাধ্যমে সময় অনুযায়ী মোটর বাইক ২৫০ টাকার মধ্যে এবং কার ৪৫০– ৫৫০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আসে।
আপনি যদি বাস যোগে চট্টগ্রাম আসেন:
অলংকার মোড় হতে ১০ নং বাসে বন্দরটিলা ৩০ টাকা তারপর বন্দরটিলা থেকে এয়ারপোর্ট বাস বা লেগুনা ১৫ টাকা এয়ারপোর্ট রোড।
এছাড়াও চট্টগ্রামের যে কোন স্থান থেকে প্রজাপতি পার্ক এবং নেভালে যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট হতে ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে প্রজাপতি পার্ক এবং নেভালের অবস্থান। সব ধরনের যানবাহনের যাতায়ত সম্ভব।